বাংলাদেশে ধান গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের প্রধান কেন্দ্র ও পথিকৃৎ হিসেবে দেশে-বিদেশে সুপরিচিত প্রতিষ্ঠানটি ১৯৭০ সালের ১লা অক্টোবর যাত্রা শুরু করে, এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সংসদীয় আইন ১০, ১৯৭৩ (Parliamentary Act X, 1973)-এর বলে “বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)” নাম ধারণ করে। রাজধানী ঢাকা থেকে ৩৬ কিলোমিটার উত্তরে জয়দেবপুরে অবস্হিত ব্রি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা এবং বাংলাদেশের জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেম (NARS)-এর একটি অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। বর্তমানে ব্রি সংসদীয় আইন ১৯, ২০১৭ (Parliamentary Act X) মোতাবেক পরিচালিত হচ্ছে। মহাপরিচালক হচ্ছেন ব্রি-র সংস্থা প্রধান। তাঁর নেতৃত্বে একটি ১৩ সদস্যবিশিষ্ট ব্যবস্থাপনা বোর্ড (Board of Management) ব্রি-র সার্বিক নীতি নির্ধারণ ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে। প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠানটি ১১টি গবেষণা বিভাগ ও ৩টি আঞ্চলিক কার্যালয় নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। সময়ের সাথে সাথে দ্রুত আধুনিক উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ধানের জাত ও উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তা ও কাজের গুণগত ও পরিমাণগত পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন গবেষণা বিভাগ ও আঞ্চলিক কার্যালয় স্হাপন ও গবেষণা সুযোগ-সুবিধাদি সম্প্রসারণ করা হয়। বর্তমানে ব্রি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১৯টি গবেষণা বিভাগ ও দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কৃষি- পরিবেশ অঞ্চলে স্থাপিত মোট ১৭টি আঞ্চলিক কার্যালয়, ৬টি স্যাটেলাইট স্টেশনের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সকল গবেষণা কর্মকান্ড পরিচালনা করে ৮টি বহু বিষয়ভিত্তিক প্রোগ্রাম এরিয়ার (multidisciplinary program area) মাধ্যমে। ইনস্টিটিউটে এখন ৩০৮ জন বিজ্ঞানীসহ ৭৮৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন।
আধুনিক উফশী ধানের জাত ও উন্নততর, নিরাপদ ও লাভজনক উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন।
ব্রি-র প্রধান উদ্দেশ্য ও অভিলক্ষ্য হচ্ছে: টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ধানভিত্তিক প্রযুক্তিসমূহের নিরন্তর উন্নয়ন। বর্তমানের সমস্যাসমূহ সমাধানকল্পে ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চারটি প্রধান লক্ষ্য সামনে রেখে ব্রি-র সকল গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হয়: কৃষকবান্ধব টেকসই ধানের জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন, প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জীববৈচিত্র্য অক্ষুন্ন রাখা, প্রাগ্রসর গবেষণার মাধ্যমে নতুন ও উন্নততর, ক্রমহ্রাসমান সম্পদসাপেক্ষ জলবায়ুবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর ও গ্রহণ ত্বরান্বিতকরণ।